39, North Brook Hall Road Banglabazar, Dhaka-1100

আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জরুরি নোটিশ ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীকে যা যা সঙ্গে আনতে হবে। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীকে যা যা সঙ্গে আনতে হবে। নিয়োগ কমিটি গঠনের বিজ্ঞপ্তি 2.Candidate List_Asistant Teacher_2024

Welcome to Our Institute

DULAL CHANDRA SAHA

Principal

মানুষের জীবন ও সমাজের চাহিদার নিরিখে শিক্ষার লক্ষ ও উদ্দেশ্য নির্ধারিত হয়। নতুন নতুন চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তা আবার পরিবর্তিত হয়। শিক্ষাই সুন্দরতম, উন্নতর জীবন ও সমাজ গঠনের প্রধান হাতিয়ার। এজন্য যুগের চাহিদা মেটাতে পারে এমন শিক্ষার প্রয়োজন। আনন্দময় শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি-নির্ভর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বদ্ধ, মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন মানব সম্পদ গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। সে আলোকেই অত্র প্রতিষ্ঠানটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষকে বাস্তবায়নের জন্য কিশোরী লাল জুবিলী স্কুল ও কলেজের সকল শিক্ষার্থী-অভিভাবক-এলাকাবাসিদের সাদর আমন্ত্রন জানাচ্ছি। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সূত্রাপুর থানাধীন কে. এল. জুবিলী স্কুল ও কলেজ শতাব্দী উত্তীর্ণ দীর্ঘ প্রায় ১৫০ বছরের দেশের এক অন্যতম প্রাচীন, বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ । বলতে গেলে, এ প্রতিষ্ঠানটি একটি ইতিহাস, একটি সূতিকাগার, সর্বোপরি- একখন্ড উর্বরা ভূমি । বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক ধারা প্রতিষ্ঠা ও সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামের পক্ষে ফলপ্রসূ ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে আজও কালের সাক্ষী হয়ে আছে । তাই বাস্তবতার আলোকেই, বিগত ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে এ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে এক উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় ছোটলাট কারমাইকেল মন্তব্য করেছিলেন, “আমার পরিদর্শনকৃত বিদ্যালয়গুলোর মাঝে জুবিলী বিদ্যালয় বৃহত্তম“ ।

উনবিংশ শতাব্দীর ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাক্ষ আন্দোলনের জোয়ার যখন ঢাকা শহরকে আন্দোলিত করে, ঠিক থখনি বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ববর্গ সর্বশ্রী অনাথ বন্ধু মল্লিক, ব্রজসুন্দর মিত্র ও দীননাথ সেন প্রমুখ-এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় “ঢাকা ব্রাক্ষ স্কুল” । ইসট ইন্ডিয়া কোম্পানি পুর্তুগিজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করার পর পর্তুগিজদেরই স্থাপিত ভবন “নীল কুঠি“ তেই “ঢাকা ব্রাক্ষ স্কুল“ এর কার্যক্রম শুরু হয় । বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর কূলে পুরনো ঢাকার বাংলাবাজারস্থ নর্থব্রুক হল রোডের পূর্ব পাশেই এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান । 

যাহোক, এক সময় স্কুলটি আর্থিক সংকটের মুখোমুখি দাঁড়ালে ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে বালিয়াটির জমিদার বিশিষ্ট সমাজসবেক, দানবীর ও শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিত্ব শ্রীযুক্ত কিশোরী লাল রায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে স্কূলটির নতুন নামকরণ করেন ‘জগন্নাথ স্কুল’ । উল্লেখ্য, শ্রীযুক্ত জগন্নাথ রায় চৌধুরী ছিলেন কিশোরী লাল রায় চৌধুরীর পিতা. যার নামে আরও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পুরনো ঢাকার বর্তমানের ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়‘ ও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ‘জগন্নাথ হল‘ । ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে কলেজ খোলার অনুমতি পাবার পর জগন্নাথ স্কুল ও কলেজ একই কেন্দ্রীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতে থাকে । পরবর্তীতে ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে মহারাণী ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে আরোহণ উপলক্ষে স্কুল ও কলেজ দু‘টি আলাদা সত্ত্বা লাভ করে । কলেজটির নামকরণ করা হয় “জগন্নাথ কলেজ” । আর স্কুলটির নামকরণ করা হয় ‘কিশোরী লাল জুবিলী স্কুল ও কলেজ বা সংক্ষেপে ‘ কে. এল. জুবিলী স্কুল‘। তৎকালীন সময়ে এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিশ্ববরেণ্য বৈজ্ঞানিক ড. মেঘনাথ সাহা, রায় বাহাদুর ড. দীনেশ চন্দ্র সেন, ডি.লিট. ড. নবগোপাল দাস, ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী বিখ্যাত সাঁতারা ব্রজেন দাস, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. খন্দাকার শওকত হোসেন, জাতীয় যাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ড. প্রকাশ চন্দ্র দাস, প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বি.কে. এম. এ-এর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, বার্জার পেইন্টসের সাবেক জিএম বর্তমানে কানাডা প্রবাসি ইকবাল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেন প্রমুখ এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভ করেছেন।  পরবর্তীতে সাবেক সফল প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রয়াত জনাব মোঃ কামরুজ্জামানের মহৎ উদ্যোগে ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েদের জন্য প্রাতঃ শাখা খোলা হয় । তাঁরই নেতৃত্বে ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক শাখা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ প্রাতঃ শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে কলেজ শাখা প্রতিষ্ঠার পর প্রতিষ্ঠানটি নবরূপ পায় ‘কে. এল. জুবিলী স্কুল ও কলেজ হিসেবে। অত্র এলাকাবাসীর সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে স্বল্প টিউশন ফি‘র বিনিময়ে বর্তমানে ‍নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও কিছু মধ্যবিত্ত তথা সর্বশ্রেণীর অভিভাবকদের সন্তান –শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের মহান অঙ্গীকার নিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানটি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে আজও সফলতার সাথে অগ্রসরমান । এখানে মধ্য্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক শাখা, কারিগরী শাখা  এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এস.এস.সি. প্রোগ্রাম চালু রয়েছে । ফলে বহুমুখী শিক্ষা গ্রহণের জন্যে এটি একটি আদর্শ সূতিকাগার । 

বতর্মান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ ২০২১ এর সাথে আমরা কিশোরী লাল জুবিলী স্কুল ও কলেজ পরিবারও একাত্বতা প্রকাশ করছি। এই লক্ষ্য পূরণে ইতোমধ্যেই শ্রেণি কক্ষে প্রজেক্টর ও ল্যাপটপের মাধ্যমে শিক্ষর্থীদের মাঝে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং রোভার স্কাউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়াও, খেলাধূলা ও সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ডিজিটাল হাজিরা চালু করা হয়েছে।

বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত সভাপতি জনাব আলহাজ্ব মোঃ আরিফ হোসেন ছোটন এবং তাঁর নির্দেশে অন্যান্য সদস্যবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পরিবেশগত শৃঙ্খলা নিশ্চিত করণে প্রতিষ্ঠানকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় আওতাভূক্ত করা এবং অনলাইন ব্যাংকিং-সহ তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে ডাইনামিক ওয়েবসাইট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ঘরে বসেই ওয়েবসাইট থেকে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। এ ওয়েবসাইটটিতে যে তথ্য ও উপাত্ত থাকবে তা অবাধ তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবে। আমাদের কাজের স্বচ্ছতা, গতিশীলতা, জবাবদিহিতার সেবার মান বৃদ্ধি পাবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

অত্র প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ও মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করণে সরকার এবং বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং সুশীল সমাজের জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তিবর্গের একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি। প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ঘটুক মহান আল্লা[হু রাব্বুল আলামিনের নিকট এই কামনা করি।